VAT at Source

VAT at Source

উৎসে মূসক কর্তন (VDS) :
বর্তমানে মূসক সংক্রান্ত একটি বহুল জিজ্ঞাসিত বিষয় হলো উৎসে মূসক কর্তন। সংশ্লিষ্ট মহলে উৎসে মূসক কর্তন বিষয়টি VDS নামে বহুল প্রচলিত।


গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
রাজস্ব ভবন, সেগুনবাগিচা, ঢাকা।

সাধারন আদেশ নং -০৬/মূসক/২০১৬ তারিখ: ১৯ জ্যৈষ্ঠ,১৪২৩ বঙ্গাব্দ/০২জুন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ
বিষয়; মূল্য সংযোজন কর (মূসক) উৎসে আদায়/ কর্তন এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা।


মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা,১৯৯১ এর বিধি ৩৮ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় রাজস্ব র্বোড সরকারী প্রতিষ্ঠান, আধাসরকারী প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, এনজিও, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, লিমিটেড কোম্পানি­, ১ (এক) কোটি টাকার অধিক বার্ষিক টার্নওভারযুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক  উৎসে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) উৎসে আদায়/ কর্তন এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে  বিস্তারিত দিকনির্দেশনা প্রদান করলো ।
০২। যে সব ক্ষেত্রে উৎসে (মূসক) কর্তন করতে হবে :
(১) নিমের ছকে বর্ণিত  সেবা সমূহের ক্ষেত্রে উহাদের  বিপরীতে উল্লিখিত হারে আবশ্যিকভাবে উৎসে মূসক  কর্তন করতে হবে । সেবা প্রদানকারী মূসক  পরিশোধপূর্বক সেবা প্রদান করলে তিনি অনুচ্ছেদ  নং-৫(ক) এ বর্ণিত  পদ্ধতি অনুসরন করবেন । সেবা প্রদানকারী মূসক  পরিশোধ ব্যতিরেকে সেবা প্রদান করলে তিনি অনুচ্ছেদ  নং-৫(খ) এ বর্ণিত  পদ্ধতি অনুসরণ করবেন:-

ক্র.নংসেবার কোডসেবার শিরোনামমূসক উৎসে কর্তনের হার
০১০২০৩০৪
০১.এস ০০২.০০ডেকোরেটর্স ও ক্যাটারার্স১৫%
০২.এস ০০৩.১০মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপ১০%
০৩.এস ০০৩.২০ডকইয়ার্ড১০%
০৪.এস ০০৪.০০নির্মাণ সংস্থা৬%
০৫.এস ০০৮.১০ছাপাখানা১৫%
০৬.এস ০০৯.০০নিলামকারী সংস্থা ১৫%
০৭.এস ০১০.১০ভূমি উন্নয়ন সংস্থা৩%
০৮.এস ০১০.২০ভবন নির্মান সংস্থাঃ(ক) ১-১১০০ বর্গফুট পর্যন্ত শতকরা দশ শতাংশ    ১.৫%
(খ) ১১০১-১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত শতকরা ষোল দশমিক ছয় শতাংশ    ২.৫%
(গ) ১৬০১ বর্গফুট হইতে শতকরা ত্রিশ শতাংশ    ৪.৫%  
 ১.৫%২.৫%৪.৫%
০৯এস ০১৪.০০ইন্ডেন্টিং সংস্থা১৫%
১০.এস ০২০.০০    জরিপ সংস্থা ১৫%
১১.এস ০২১.০০প্ল্যান্ট বা মূলধনী যন্ত্রপাতি ভাড়া প্রদানকারী সংস্থা১৫%
১২.এস ০২৪.০০আসবাব পত্রের বিপণন কেন্দ্রঃ(ক) উৎপাদন পর্যায়ে            
(খ) বিপণন পর্যায়ে (শো-রুম)
(উৎপাদন পর্যায়ে ৬% হারে মূসক পরিশোধের
  চালানপত্র থাকা সাপেক্ষে)।            
৬%৪%
১৩.এস ০২৮.০০কুরিয়ার (Courier) ও এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস১৫%
১৪.এস ০৩১.০০পণ্যের বিনিময়ে করযোগ পণ্য মেরামত বা   
সার্ভিসিং-এর কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি,  প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা
১৫%
১৫.এস ০৩২.০০কনসালটেন্সী ফার্ম ও সুপারভাইজরী ফার্ম ১৫%
১৬.এস ০৩৩.০০ইজারাদার১৫%
১৭.এস ০৩৪.০০অডিট এন্ড একাউন্টিং ফার্ম ১৫%
১৮.এস ০৩৭.০০যোগানদার (Procurement Provider)৫%
১৯.এস ০৪০.০০      সিকিউরিটি সার্ভিস ১৫%
২০.এস ০৪৫.০০       আইন পরামর্শক১৫%
২১.এস ০৪৮.০০পরিবহণ ঠিকাদারঃ(ক) পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে   
(খ) অন্যান্য পণ পরিবহনের ক্ষেত্রে   
 ৪.২৫%।১০%।
২২.এস ০৮৯.০০     যানবাহন ভাড়া প্রদানকারী১৫%
২৩.এস ০৫০.১০      আর্কিটেক্ট, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার বা ইন্টেরিয়র ডেকোরেটর১৫%
২৪.এস ০৫০.২০    গ্রাফিক ডিজাইনার  ১৫%
২৫. এস ০৫১.০০     ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম ১৫%
২৬.এস ০৫২.০০       শব্দ ও আলোক সরঞ্জাম ভাড়া প্রদানকারী১৫%
২৭.এস ০৫৩.০০        বোর্ড সভায় যোগদানকারী১৫%
২৮.এস ০৫৪.০০      উপগ্রহ চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারকারী১৫%
২৯.এস ০৫৮.০০       চার্টার্ড বিমান বা হেলিকপ্টার ভাড়া প্রদানকারী সংস্থা১৫%
৩০.এস ০৬০.০০       নিলামকৃত পণ্যের ক্রেতা৪%
৩১.এস ০৬৫.০০       ভবন মেঝে ও অঙ্গন পরিষ্কার/রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থা১৫%
৩২.এস ০৬৬.০০       লটারির টিকিট বিক্রয়কারী১৫%
৩৩.এস ০৭১.০০অনুষ্ঠান আয়োজক   ১৫%
৩৪.এস ০৭২.০০       মানব সম্পদ সরবরাহ বা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান১৫%
৩৫.এস ০৯৯.১০      তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর সেবা (Information Technology Enabled Services)৪.৫%
৩৬.এস ০৯৯.২০       অন্যান্য বিবিধ সেবা১৫%
৩৭.এস ০৯৯.৩০       স্পন্সরশীপ সেবা (Sponsership Services)৭.৫%
৩৮এস ০৯৯.৬০ ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি১৫

(২) ‘যোগানদার’ সেবার ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন :

উপরের  তালিকার ১৮ নং ক্রমিতে বর্ণিত সেবা ”যোগানদার”  এর ক্ষেত্রে  উৎসে মূসক কর্তন  বিষয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে । “যোগানদার” (Procurement Provider) অর্থ কোটেশন বা দরপত্র বা অন্যবিধভাবে বিভিন্ন সরকারী, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), ব্যাংক, বীমা বা অন্যকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান, লিমিটেড কোম্পানি, ১ (এক) কোটি টাকার অধিক বার্ষিক টার্নওভারযুক্ত প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিকট পণ্যের বিনিময়ে করযোগ্য পণ্য বা সেবা বা উভয়েই সরবরাহ করেন এমন কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা, যোগানদার সেবার সংজ্ঞায় “অন্যবিধভাবে” শব্দের অর্থ হলো যেভাবেই ক্রয় কবা হোক না কনো, অর্থাৎ নগদে ক্রয় করা হলে বা যেকোন মূল্যে ক্রয় করা হলে তা ‘যোগানদার’ সেবার অন্তর্ভুক্ত হবে। তাই  এসব ক্ষেত্রে  মূসক উৎসে কর্তন  করতে হবে । অথবা ক্রয়কারী তার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রযোজ্য মূসক-এর অর্থ প্রদান করে সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করবেন। যোগানদারের সংজ্ঞায় ”করযোগ্য পণ্য বা সেবা” সরবরাহকারী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর অর্থ হল – যে পণ্য বা সেবা বা সরবরাহ নেয়া হয়েছে তা করযোগ্য হতে হবে । তবে পণ্য বা সেবার করযোগ্যতা আইনের প্রথম তফসিল ও দ্বিতীয় তফসিল এর ভিত্তিতে নিরুপিত হবে । প্রজ্ঞাপন দ্বারা  প্রদত্ত অব্যাহতি কেবল করযোগ্য পণ্য বা সেবার বিভিন্ন পর্যায়ের অব্যাহতি হিসেবে গন্য বিধায় উক্ত পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে  মূসক উৎসে কর্তন  করতে  হবে । মনে রাখতে হবে যে “যোগানদার” হলো একটি সেবা- করযোগ্য পণ্য বা সেবা সরবরাহ করা সংক্রান্ত সেবা। তাই, কোন পণ্যের সরবরাহ ”যোগানদার” হিসেবে পরিচিত হবে কিনা তা অনুধাবনের জন্য নিম্নের বিষয়সমূহ বিবেচনায় আনতে হবেঃ
(ক) কোন উৎপাদক বা ব্যবসায়ী ১৫% হারে মূসক পরিশোধিত ‘মূসক ১১/মূসক-১১ক’ চালানসহ পণ্য সরবরাহ করলে উক্ত সরবরাহ ”যোগানদার”সেবা হিসেবে বিবেচিত হবে না বিধায় এরূপক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে না। তবে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে উৎপাদন পর্যায়ে কোন করযোগ্য পণ্যকে অব্যাহতি প্রদান করা হলে এবং উক্ত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরাসরি “মূসক-১১”/“মূসক-১১ক” চালানসহ সরবরাহ প্রদান করা হলে উক্ত সরবরাহ কার্যক্রম “যোগানদার” সেবা হিসেবে বিবেচিত হবে না।
(খ) উৎপাদকের নিকট থেকে বা নির্ধারিত মূল্য সংযোজনের ভিওিতে মূসক পরিশোধকারী ক্ষুদ্র খুচরা ব্যবসায়ী ব্যতীত অন্যান্য ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ক্রয় করে বা আমদানি করে পণ্য সরবরাহ করা হলে তা যোগানদার হিসেবে বিবেচিত হবে, বিধায় এরূপক্ষেত্রে মূসক উৎসে কর্তন করতে হবে ।
(গ) যে সকল সেবার সুনির্দিস্ট সংজ্ঞা রয়েছে, যে সকল সেবার সরবরাহ যোগানদার হিসেবে গন্য হবে না ।
(৩) উপরের(১) উপানুচ্ছেদের তালিকায় বর্ণিত সেবাসমুহ ব্যতীত অন্য কোন সেবা বা পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তনে বাধ্যবাধকতা নেই । তবে, মূল্য সংযোজন কর আইন,১৯৯১ এর ধারা ৩৭ এর উপ-ধারা (২) এর দফা (ট)অনুসরে প্রযোজ্য মূসক পরিশোধিত হয়েছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব পণ্য বা সেবা গ্রহণকারীর রয়েছে। তিনি মূসক চালান, ট্রেজারী চালান, চলতি হিসাব বা অন্য কোন দলিলাদি দৃষ্টে মূসক পরিশোধিত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হবেন। মূসক পরিশোধিত হয়ে থাকলে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে না।মূসক পরিশোধিত না হয়ে থাকলে প্রযোজ্য মূসক উৎসে কর্তন করতে হবে ।

(৪) বিধি-১৮ঙ অনুসারে উৎসে মূসক কর্তন: মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১ এর বিধি-১৮ঙ অনুসারে সরকারী, আধাসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান বা নবায়নকালে উক্তরূপ সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তির নিকট হতে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থের ওপর ১৫ (পনের) শতাংশ হারে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে। প্রদত্ত লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, পারমিটে উল্লেখিত শর্তের আওতায় রাজস্ব বন্টন (revenue sharing),রয়্যালটি, কমিশন, চার্জ, ফি বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত সমুদয় মূল্যের ওপর উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং টেলিফোন সংযোগ প্রদানকালে সংযোগ ফি’র উপর উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে।

(৫) বিধি ১৮ক এর উপবিধি (৩) অনুসারে সেবা আমদানির ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন: যে ক্ষেত্রে  বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার বাহির হতে সেবা সরবরাহ করা হয় এবং বাংলাদেশে সেবা গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে  ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান (যারা বিল পরিশোধের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে তারা) প্রযোজ্য হারে মূসক উৎসে কর্তন করবে। কর্তিত মূসক জমাদানের প্রমাণ এবং এবং মূল্য ঘোষনায় উক্ত সেবা অন্তর্ভুক্ত থাকা সাপেক্ষে উক্ত মূসক রেয়াত গ্রহণ করতে পারবে ।

(০৬) উৎসে মূসক কর্তনযোগ্য  কোন সেবা ক্রয়ের বিপরীতে যদি ক্রেতার ব্যাংক অভ্যন্তরীণ ঋণপত্র বা অন্য কোন মাধ্যমে ক্রয়ের পক্ষে মূল্য পরিশোধ করে, তাহলে উক্ত ব্যাংক ক্রেতার পক্ষে প্রযোজ্য মূসক উৎসে কর্তন এবং সরকারী কোষাগারে জমা প্রদান করবে।

০৩। যে সব ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে না
(ক)“ মূসক-১১/“মূসক-১১ক” চালানপত্র বা “মূসক-১১”চালানপত্র  হিসেবে বিবেচিত কোন চালানপত্রমূলে উৎপাদক/প্রস্তুতকারক বা ব্যবসায়ী সরাসরি পণ্য সরবরাহ করলে বা টার্নওভার কর বা কুটির শিল্পের আওতায় তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তি নম্বর সম্বলিত ক্যাশমেমোমূলে সরাসরি পণ্য সরবরাহ করলে, উক্ত সরবরাহ “যোগানদার”  হিসেবে বিবেচিত হবে না বিধায় উৎসে এরূপ ক্ষেত্রে মূসক উৎসে কর্তন করতে হবে না।
(খ) গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, পানি ইত্যাদি পরিসেবার বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে না।
(গ) “বিজ্ঞাপনী সংস্থা” শীর্ষক সেবা প্রদানকারী যেক্ষেত্রে স্থানীয় মূল্য সংযোজন কর কার্যালয়ের রাজস্ব কর্মকর্তা/সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কর্তৃক প্রত্যয়িত “মূসক -১১” চালানপত্র বা “মূসক-১১” হিসেবে বিবেচিত কোন চালানপত্রসহ  বিল দাখিল করবে, সেক্ষেত্রে মূসক উৎসে কর্তন করতে হবে না । উক্তরূপে প্রত্যয়িত মূসক চালান না থাকলে  ১৫ শতাংশ হারে মূসক উৎসে কর্তন করতে হবে ।

০৪।  উৎসে মূসক কর্তনকারীর করণীয়ঃ
উৎসে মূসক কর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সরকারী কোষাগারে উৎসে কর্তনকারীর সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেটের কোডে কর্তিত অর্থ জমা প্রদান করতে হবে। ট্রেজারী চালানে অর্থনৈতিক কোড “১/১১৩৩/সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটের কোড/০৩১১” লিখতে হবে।  কমিশনারেটের কোডসমূহ হলো: ঢাকা (পূর্ব) ০০৩০, ঢাকা (পশ্চিম) ০০৩৫, ঢাকা (উত্তর) ০০১৫, ঢাকা (দক্ষিণ) ০০১০, চট্টগ্রাম ০০২৫, কুমিল্লা ০০৪০, সিলেট ০০১৮, রাজশাহী ০০২০, রংপুর ০০৪৫, যশোর ০০০৫, এবং খুলনা ০০০১ । এলটিইউ (মূসক) কমিশনারের অর্থনৈতিক কোড ১/১১৩৩/০০০৬/০৩১১ । ট্রেজারী চালানের প্রথম কলামে “যাহার মারফত প্রদত্ত হলো তাহার নাম ও ঠিকানা” এর নিম্নে উৎসে মূসক কর্তনকারীর নাম, ঠিকানা, মূসক নিবন্ধন নম্বর (যদি থাকে), সার্কেল এবং কমিশনারেটের নাম লিখতে হবে। ট্রেজারী চালানের দ্বিতীয় কলামে “যে ব্যক্তির/প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে টাকা প্রদত্ত হলো তার নাম, পদবি ও ঠিকানা” এর নিম্নে পণ্য বা সেবা সরবরাহকারীর নাম, ঠিকানা,  মূসক নিবন্ধন নম্বর, সার্কেল এবং কমিশনারের নাম লিখতে হবে। একাধিক সরবরাহকারীর নিকট হতে কর্তিত মূসক, একটি ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা প্রদানের ক্ষেত্রে এস্থলে “বিস্তারিত বিপরীত পৃষ্ঠায় দেখুন” লিখতে হবে । অতঃপর বিপরীত পৃষ্ঠায় পণ্য/সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের ব্রেক-আপ দিতে হবে। জমা প্রদানের অনধিক ৫(পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে অর্থবছর ভিত্তিক সংখ্যানুক্রমিক নম্বরযুক্ত ‘মূসক-১২খ’ ফরমে তিনকপি প্রত্যয়নপত্র প্রস্তুত ও জারী করতে হবে।  ‘মূসক-১২খ’ ফরমে একাধিক সরবরাহকারীর তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করা যাবে। প্রত্যয়নপত্র (ট্রেজারী চালানের মূলকপিসহ) উৎসে মূসক কর্তনকারীর সংশ্লিষ্ট সার্কেলে প্রেরণ করতে হবে। মূসক সার্কেল রাজস্ব বিবরণীতে উহা প্রদর্শন করবে। প্রত্যয়নপত্রের অনুলিপি (ট্রেজারী চালানের সত্যায়িত ছায়ালিপিসহ) সেবা সরবরাহকারী বরাবরে প্রেরণ করতে হবে। প্রত্যয়নপত্রের একটি অনুলিপি উৎসে কর্তনকারী ৬ (ছয়) বছর সংরক্ষণ করবেন। তবে, চেকের মাধ্যমে ট্রেজারীতে অর্থ জমা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় ট্রেজারী চালান পেতে বিলম্ব হয়। তাই, এরূপ ক্ষেত্রে ট্রেজারী চালান প্রাপ্তির (ট্রেজারী চালানে উল্লিখিত) তারিখ থেকে অনধিক ৫(পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যয়নপত্র প্রস্তুত ও জারি করতে হবে। নিবন্ধিত উৎসে কর্তনকারী সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদে উৎসে কর্তিত এবং ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমাকৃত মূসক-এর পরিমাণ দাখিলপত্রের যথাক্রমে ক্রমিক নং-৫ এবং ১৬ এর বিপরীতে প্রদর্শন করবেন।

০৫। সেবা সরবরাহকারীর করণীয়:
(ক) যে ক্ষেত্রে  মূসক পরিশোধ করে সেবা প্রদান করা হয়েছে: অনেক  ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী উৎসে কর্তনকারীর  নিকট সেবা সরবরাহ করলেও সেবা প্রদানের উপর প্রযোজ্য মূসক স্বাভাবিকভাবে  পরিশোধ করে  থাকেন। আবার, সেবা গ্রহোণকারী কর্তৃক  রেয়াত নেয়ার সুবিধার্থে অনেক সময় মূসক পরিশোধ করে সেবা গ্রহণ করা হয়। সেবা প্রদানকারী কর্তৃক দাখিলপত্র দাখিল করার ক্ষেত্রে “মূসক-১৯” ফরমের ঘরসমূহে অংক ছাড়া  অন্য কোন বর্ণনা এন্ট্রি প্রদানের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে যে সকল সেবার বিপরীতে উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে এবং প্রদত্ত সেবার বিপরীতে প্রযোজ্য মূসক পরিশোধিত হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানকারী তার দাখিলপত্রের ১ নং ক্রমিকে সমুদয় বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্য লিপিবদ্ধ করবেন। ৪ নং ক্রমিকে স্বাভাবিকভাবে সমুদয় প্রদেয় লিপিবদ্ধ করবেন। তিনি সরবরাহকৃত সেবার বিপরীতে প্রাপ্ত “মূসক-১২খ” এর তথ্য অনুযায়ী তার পরিমাণ উহা জারির কর মেয়াদ বা তার অব্যাহতি পরবর্তী কর মেয়াদের দাখিলপত্রের ক্রমিক নং-১২ এর বিপরীতে লিপিবদ্ধ করে সমন্বয় করবেন । প্রাপ্ত “মূসক-১২খ” এর ভিত্তিতে সর্বমোট অর্থের পরিমাণ ক্রমিক নং-১৯ এ লিপিবদ্ধ করতে হবে। তবে, এলটিইউভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ যদি উপানুচ্ছেদ (খ) মোতাকে কার্যক্রম গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে দাখিলপত্রের হার্ডকপিতে যথাযথভাবে এন্ট্রি প্রদান করতে হবে।


(খ) যেক্ষেত্রে মূসক পরিশোধ না করে সেবা প্রদানকরা হয়েছে: সাধারনত: সেবা প্রদানকারীগণ সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদের পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে দাখিলপত্র দাখিল করার পূর্বে মূসক-এর অর্থ সরকারি ট্রেজারীতে জমা প্রদান করে থাকেন। উৎসে মূসক কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের  নিকট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে যেহেতু প্রযোজ্য মূসক উৎসে কর্তন করা হবে সেহেতু সেবা প্রদানকারী কর্তৃক মূসক পরিশোধ না করার জন্য এই উপানুচ্ছেদ পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এরূপ  ক্ষেত্রে সেবা প্রদানের সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদে, সরবরাহকারীর দাখিলপত্রের ১ এবং ৪ নং ক্রমিকে এন্ট্রি দিতে হবে । দাখিলপত্রের ১ নং ক্রমিকে “করযোগ্য পণ্য, সেবা বা পণ্য ও সেবার নীট বিক্রয়” এর বিপরীতে ৪ নং ঘরে ‘মূল্য সংযোজন কর’এর পরিমাণ লিখতে হবে। উক্ত পরিমাণের মধ্যে কত টাকা উৎসে কর্তনযোগ্য তা প্রথম বন্ধনীর (. . .) মধ্যে লিখতে হবে। দাখিলপত্রের ৪ নং ক্রমিকে “মোট প্রদেয় কর (সারি ১ হইতে SD+VAT)” এর বিপরীতে, ১ নং ক্রমিকে উল্লেখিত উৎসে কর্তনযোগ্য অর্থের পরিমাণ বাদ দিয়ে লিখতে হবে। সেবা সরবরাহকারী “মূসক-১২খ” ফরমে প্রত্যয়নপত্র প্রাপ্তির পর উৎসে কর্তনকারী কর্তৃক সরবরাহকারীকে প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র প্রদানের কর মেয়াদে অথবা  অব্যবহিত পরবর্তী কর মেয়াদে দাখিলপত্রের ১৯ নং ক্রমিকে উহা এন্ট্রি দিবেন । প্রাপ্ত “মূসক-১২খ”এবং ট্রেজারী চালানের ছবিলিপি দাখিলপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। কত টাকার “মূসক-১২খ” এখনও পাওয়া যায়নি তা এস্থলে দাখিলপত্রের ১৯ নং ক্রমিকে বন্ধনীর (. . .) মধ্যে উল্লেখ করতে হবে । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পূর্ববর্তী কর মেয়াদের দাখিলপত্রের ১৯ নং ক্রমিকের বন্ধনীতে প্রদর্শিত “মূসক-১২খ”এর পরিমাণের সাথে বর্তমান কর মেয়াদের দাখিলপত্রের ১ নং ক্রমিকের বন্ধনীতে প্রদর্শিত উৎসে কর্তনযোগ্য মূসকের পরিমাণ যোগ করে, যোগফল থেকে বর্তমান কর মেয়াদের দাখিলপত্রের ১৯ নং ক্রমিকে প্রদর্শিত প্রাপ্ত “মূসক-১২খ” এর পরিমাণ বিয়োগ করলে, এ পর্যন্ত কত টাকার “মূসক-১২খ”পাওয়া যায়নি তার পরিমাণ পাওয়া যাবে। দাখিলপত্রের ১৯ নং ক্রমিকের বন্ধনীতে প্রদর্শিত অর্থের পরিমাণ দেখে মূসক কর্মকর্তাগণ বুঝতে পারবেন যে, এখন পর্যন্ত কত টাকার উৎসে কর্তন অনিষ্পন্ন রয়েছে অর্থাৎ “মূসক-১২খ” পাওয়া যায়নি।

০৬।  সুদ, দন্ড ইত্যাদি: উৎসে কর্তনে দায়িত্ব থাকা সত্বেও মূসক কর্তন করা না হলে উক্ত অর্থ মাসিক ২% সুদসহ তার নিকট থেকে এমনভাবে আদায়যোগ্য হবে, যেন তিনি পণ্য বা সেবা সরবরাহকারী। উৎসে কর্তন করার পর সরকারী কোষাগারে যথাসময়ে জমা প্রদান না করা  হলে কর্তনকারী ব্যক্তি, জমা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী  কর্মকর্তা প্রত্যেককে  সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনার  অনাধিক ২৫,০০০(হাজার টাকা মাত্র) ব্যক্তিগত জরিমানা আরোপ করতে পারবেন । তাছাড়া, কর্তিত অর্থ মাসিক ২% সুদসহ আদায়যোগ্য হবে। উৎসে মূসক কর্তন ও জমাদানে ব্যর্থতার জন্য পণ্য বা সেবা সরবরাহকারী এবং গ্রহনকারী উভয়ে সমানভাবে দায়ী হবেন।

০৭ । বিবিধ
(ক) অনেক সময় ”যোগানদার”প্রতিষ্ঠান প্রাপ্ত দরপত্র বা কার্যাদেশের বিপরীতে সরবরাহ প্রদানের উদ্দেশ্যে পণ্য আমদানি করে থাকেন । দরপত্র বা কার্যাদেশের বিপরীতে সরবরাহের উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত পণ্যের উপর আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম মূল্য সংযোজন কর আদায়যোগ্য হবে না । শুল্কায়নের সময় দরপত্র বা কার্যদেশে সংক্রান্ত দলিলাদি দাখিল করতে হবে সরবরাহ পর্যায়ে ”যোগানদার” হিসেবে মূসক উৎসে কর্তনযোগ্য হবে ।
(খ) কেন্দ্রীয় নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানসমূহের শাখা/ বিক্রয়কেন্দ্র তাদের কেন্দ্রীয় দপ্তরের মাধ্যমে উৎসে কর্তিত মূসক জমা প্রদান করবে ।
(গ) “স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহনকারী”সেবার উপর মূসক যা সহজ ভাষায় আমরা বাড়ি ভাড়া বা অন্য কোন স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর মূসক বলে বুঝে থাকি, তা ভাড়া গ্রহণকারী কর্তিৃক প্রদেয় মূসক। ইহা উৎসে কর্তন নয় । ভাড়া গ্রহণকারী নিজের মূসক নিজেই প্রদান করেন ।
(ঘ) আমদানি পর্যায়ে পরিশোধিত অগ্রিম মূসক (ATV) চলিত হিসাব রেজিস্টারে (মূসক -১৮) রেয়াত নেয়ার স্বাভাবিক বিধান রয়েছে। তাই, দাখিলপত্রের ১২ নং ক্রমিকে উহা প্রদর্শন করতে হবে না । তবে, যে সব সেবা প্রদানকারী চলতি হিসাব রেজিস্টার সংরক্ষণ করেন না, তারা উক্ত মূসক দাখিলপত্রের ১২ নং ক্রমিকে প্রদর্শন করে রেয়াত গ্রহন করবেন।

(ঙ) কোনো পণ্যের ঘোষিত মূল্যের চেয়ে টেন্ডার মূল্য কম বা বেশী হলে টেন্ডার মূল্য উৎপাদন উল্লিখিত মূসকসহ মূল্য অভিন্ন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ নং ৩(ক) মোতাবেক উৎসে মূসক কর্তন করতে হবে না।
(চ) একটি সরবরাহের একাধিক উপাদান থাকলে উৎসে মূসক কর্তন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয় । এরূপক্ষেত্রে, টেন্ডার, কোটেশন বা বিলে সরবরাহের উপাদানসমূহ ও প্রতিটি উপাদানের বিপরীতে মূল্য আলাদা আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং প্রতিটি উপাদানের উপর উৎসে মূসক কর্তন সংক্রান্ত বিধানবলী প্রয়োগ করতে হবে ।

০৮। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাধারণ আদেশ নং -৩/মূসক/২০১৪ তারিখ:০৫ জুন, ২০১৪ খ্রি: এতদ্বারা বাতিল করা হলো।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদেশক্রমে
(মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান)
প্রথম সচিব (মূসকঃ নীতি) 1345 hits

Read more »