পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী এবং জীবনযাত্রা সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী

যদি কোন ব্যক্তি-করদাতা নিম্নোক্ত শর্তসমূহ পূরণ করেন তাহলে আয় বছরের শেষ তারিখে তার নিজের, spouse এর (spouse করদাতা না হয়ে থাকলে) এবং নির্ভরশীল সন্তানদের পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী ঐ ব্যক্তির আয়কর রিটার্নের সাথে দাখিল করতে হবে। শর্তসমূহ হলো-
১. আয় বছরের শেষ তারিখে মোট পরিসম্পদ (gross wealth) এর পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকার অধিক হলে; অথবা
২. আয় বছরের শেষে তারিখে মোট গাড়ি (জীপ বা মাইক্রোবাসসহ) এর মালিকানা থাকলে; অথবা
৩. আয় বছরে কোন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কোন গৃহ-সম্পত্তি বা এপার্টমেন্টের মালিক হলে অথবা গৃহ-সম্পত্তি বা  এপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করলে।
কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ না হলে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করা তার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে বর্ণিত শর্তসমূহ পূরণ না করা সত্বেও কোন ব্যক্তি করদাতা চাইলে স্ব-প্রণোদিতভাবে (Voluntarily) পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করতে পারবেন। উপরোক্ত শর্তসমূহ পূরণ না করার কারণে  পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করেননি এমন যেকোন ব্যক্তিকে উপ কর কমিশনার ধারা ৮০ এর উপধারা (৩) অনুযায়ী নোটিশ প্রেরণ করে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করার জন্য বলতে পারবেন।

(ক). সম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী (ফরম আইটি-১০বি, আইটি-১০বিবিবি, আইটি-১০বিবিবিবি ও আইটি১০বি২০১৬)

আইটি-১০বিঃ  যে সকল করদাতা প্রচলিত রিটার্ন ফরম অর্থাৎ আইটি-১১গ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণীটি প্রযোজ্য হবে।
আইটি-১০বিবিবিঃ  যে  সকল  বেতনভোগী  করদাতা  সহজীকৃত রিটার্ন ফরম অর্থাৎ আইটি-১১ঙ  এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণীটি প্রযোজ্য হবে।
আইটি-১০বিবিবিবিঃ  ব্যবসা  বা  পেশার  ক্ষেত্রে  ৩  লক্ষ  টাকা  পর্যন্ত  আয় বিশিষ্ট করদাতাদের যারা যে সকল করদাতা সহজীকৃত রিটার্ন ফরম অর্থাৎ আইটি-১১চ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণীটি প্রযোজ্য হবে।
আইটি-১০বি২০১৬ঃ সকল ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতা যারা নতুন ফরম অর্থাৎ, আইটি-১১গ২০১৬ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করলে তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণটি প্রযোজ্য হবে

ব্যক্তি করদাতার স¤পদের পরিমাণ যা-ই হোক না কেন তাঁকে স¤পদ ও দায়ের বিবরণী এবং জীবন যাত্রার মান স¤পর্কিত তথ্য বিবরণী পূরণ করতে হবে।  যে সকল করদাতা প্রচলিত রিটার্ন ফরমের (আইটি-১১গ) মাধ্যমে তাঁদের  আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন সে সকল  করদাতা  আইটি  ১০বি, যে সকল বেতনভোগী করদাতা আইটি-১১ঙ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন সে সকল করদাতা আইটি-১০বিবিবি  এবং যে সকল পেশাজীবি বা ব্যবসায়ী করদাতা আইটি-১১চ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দখিল করবেন  সে সকল করদাতা আইটি-১০বিবিবিবি পূরণের মাধ্যমে তাঁদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করবেন।

আয় বছরের শেষ তারিখে (যেমন ২০১৬-২০১৭ কর বছরের জন্য ৩০/০৬/২০১৫  ইং তারিখে) যে সম্পদ ও দায় রয়েছে করদাতাকে তা সম্পদ ও দায় বিবরণীতে দেখাতে হবে। করদাতা তাঁর নিজের, তাঁর  স্ত্রী  বা স্বামী (তাঁরা রিটার্ন দাখিলকারী না হলে) বা নাবালক সন্তানের যাবতীয় পরিসম্পদ ও দায়, সম্পদ ও দায় বিবরণীতে দেখাবেন। সম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে দেখানো কোন সম্পদ কিভাবে অর্জিত হয়েছে তার ব্যাখ্যা থাকতে  হবে। অর্থাৎ  কোন  সম্পদ  কেনা  হয়ে  থাকলে  ক্রয়মূল্য  বাবদ  পরিশোধিত অর্থের উৎস সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। করদাতা  যদি কোন সম্পদ দান হিসেবে পেয়ে থাকেন  তাহলে  দানকারীর  নাম,  ঠিকানা ও  ই-টিআইএন উল্লেখ করতে হবে এবং দানের স্বপক্ষে কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। করদাতা নিজেও যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দান করেন  বা ঋণ দিয়ে থাকেন, তাহলে যিনি দান বা ঋণ গ্রহণ করেছেন তাঁর নাম, ঠিকানা এবং টিআইএন উল্লেখ করতে হবে।

করদাতা যদি কোন ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে  তা  স¤পদ ও দায়ের  বিবরণীর ”বাদঃ  দায়সমূহ” অথবা  ইংরেজী  ফরমের “Less:Liabilities” অংশে দেখাতে হবে।

সম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পূরণের ক্ষেত্রে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলি পালন করতে হবেঃ
●  সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তর বা নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত  তার ক্রয় বা অর্জিত  মূল্যে প্রদর্শন করে যেতে হবে;
●  নতুন সম্পদ ক্রয় করলে তার ক্রয়মূল্য প্রদর্শন করতে হবে;
●  সম্পদ অজর্ন করলে (দান বা উত্তরাধিকার সূত্রে) অর্জনকালীন সময়ের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রদর্শন করতে হবে;

যেকোন স¤পদ তা ক্রয় বা অন্য যে কোনভাবে অর্জিত হোক না কেন তা সম্পদ বিবরণীতে  ঘোষণা করা না হলে আয়কর আইন অনুযায়ী তা সম্পদ গোপন করা হিসেবে গণ্য হবে।

স¤পদের মোট পরিবৃদ্ধি অর্থাৎ সম্পদের পরিবৃদ্ধি অংশে প্রাপ্ত অংকের সাথে পারিবারিক ব্যয় যোগ করে যে যোগফল পাওয়া যাবে তা  “মোট সম্পদ পরিবৃদ্ধি” অংশে দেখাতে হবে। অপরপক্ষে সম্পদের  পরিবৃদ্ধি ঋণাত্বক হলে তা থেকে পারিবারিক ব্যয় বিয়োগ করে যে পার্থক্য পাওয়া যাবে তা “মোট সম্পদ পরিবৃদ্ধি” অংশে দেখাতে হবে।

”অর্জিত তহবিল” অংশে বিবেচনাধীন করবর্ষে রিটার্নে  প্রদর্শিত আয়, কর অব্যাহতি প্রাপ্ত ও করমুক্ত আয় এবং নিজস্ব আয় ব্যতীত অন্য কোন প্রাপ্তি থাকলে দেখাতে হবে।

“পার্থক্য” বলতে “সম্পদের মোট পরিবৃদ্ধি” এবং “অর্জিত তহবিল  সমূহ” এর যোগফলের পার্থক্য  বুঝানো  হয়েছে। সাধারণভাবে  অর্জিত  তহবিলের  যোগফল  দ্বারা স¤পদের মোট পরিবৃদ্ধির সংকুলান হতে হবে। সম্পদের পরিবৃদ্ধি অর্জিত তহবিলের চাইতে বেশী  হলে এবং তার কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না থাকলে স¤পদের এই অতিরিক্ত অংক করদাতার হাতে অব্যাখ্যায়িত আয় হিসেবে করযোগ্য হবে।

আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ সংশোধনের মাধ্যমে পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় প্রদর্শনের জন্য নতুন ফরম  IT-10B2016 প্রবর্তন করা হয়েছে। যে সকল করদাতা নতুন রিটার্ন ফরম (IT-10B2016) ব্যবহার করবেন তাদেরকে IT-10B2016 ফরম ব্যবহার করতে হবে। ব্যক্তি করদাতার ব্যবসার পুঁজি বা মূলধন অথবা কৃষি বা অকৃষি সম্পত্তি থাকলে IT-10B2016 ফরমের সাথে schedule 25 সংযুক্ত করতে হবে।
যে সকল ব্যক্তি-করদাতা পুরোনো ফরমে রিটার্ন দাখিল করবেন তারা ঐ রিটার্নের সাথে সংশ্লিষ্ট আগের পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিল করবেন।
পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী পূরণে সাধারণ জ্ঞাতব্য বিষয়:
১. পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে আয় বছরের শেষ তারিখের পরিসম্পদ (assets) ও দায় (liabilities) এর সমাপনী জের
(closing balance) এর তথ্য প্রদান করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে কোন করদাতার যদি মোট ৭,০০,০০০/- টাকার সঞ্চয়পত্র থাকে এবং তিনি যদি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে আরো ৩,০০,০০০/- টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেন এবং আয় বছরের শেষ তারিখ পর্যন্ত কোন সঞ্চয়পত্র না ভাঙান তাহলে ২০১৬-১৭ বছরের জন্য দাখিলকৃত পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে সঞ্চয়পত্রের পরিমাণ প্রদর্শণ করতে হবে (৭,০০,০০০+৩,০০,০০০) = ১০,০০,০০০/- টাকা।
২. ক্রয়কৃত সম্পত্তির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রিশন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচসহ ক্রয়মূল্য প্রদর্শন করতে হবে। ধরা যাক একজন করদাতা
১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ১৫,০০,০০০/- টাকায় একটি অকৃষি প্লট ক্রয় করেছেন, যার রেজিস্ট্রেশন ও অন্যান্য অনুষঙ্গিক খরচ ছিল, ৩,০০,০০০/- টাকা। ৩০ জুর ২০১৬ তারিখে প্লটটির বাজারমূল্য ছিল ২২,০০,০০০/- টাকা। এক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ কর বছরের জন্য করদাতার দাখিলকৃত পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে অকৃষি প্লটের মূল্য (১৫,০০,০০০ + ৩,০০,০০০) = ১৮,০০,০০০/- টাকা প্রদর্শিত হবে।
৩. করদাতার স্বামী/স্ত্রী বা নির্ভরশীল কোন সন্তানের আলাদা কর নথি না থাকলে তাদের পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় করদাতার
পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয়ের সাথে একীভূত করে দেখাতে হবে।
৪. পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীর কোন ক্রমিকে স্থান সংকুলান না হলে কাগজে সে ক্রমিকের জন্য অতিরিক্ত তথ্য লিকে
পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীর সাথে সংযুক্ত করা যাবে। আলাদা কাগজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কাগজের উপর কর বছর, করদাতার টিআইএন এবংপরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীর কোন ক্রমিক নম্বর উল্লেখ করতে হবে এবং তাতে করদাতার স্বাক্ষর থাকতে হবে। সংযুক্ত আলাদা কাগজটি পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীর অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, কোন করদাতা যদি কোন আয় বছরের ৩ জন ব্যক্তিকে ঋণ প্রদান করে থাকেন তাহলে IT-10B2016 এর সাথে আলাদা কাগজ সংযুক্ত করে তাতে নিম্নরূপভাবে তথ্য লিপিবদ্ধ করা যেতে পারে:

কর বছর: ২০১৬-১৭
টিআইএন:——————-
ক্রমিক ৮ডি: ঋণ প্রদান:

ক্রমঋণ গ্রহণকারীর নামটিআইএন ও সার্কেলপরিমাণ
০১   
০২   
০৩   
মোট 

(করদাতার স্বাক্ষর)


নতুন প্রবর্তিত পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী (IT-10B2016) এর বিভিন্ন অংশের বিবরণ:
ক্রমিক নং-১:    কর বছরের তথ্য দিতে হবে। ২০১৬-১৭ কর বছরের জন্য পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে এ ঘরের বক্সগুলোতে বাংলা বা ইংরেজীতে নিম্নরূপভাবে লিখতে হবে:

201617


ক্রমিক নং-২:    আয় বছরের শেষ দিনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। তারিখটি  দিন-মাস-বছর আকারে লিখতে হবে।
                    ২০১৬-১৭ কর বছরের জন্য পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে এ ঘরের বক্সগুলোতে বাংলা বা ইংরেজীতে নিম্নরূপভাবে লিখতে হবে:

30062016

ক্রমিক নং-৩:    করদাতার নাম লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৪:    করদাতার  টিআইএন লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৫:    করদাতার ব্যবসা বা পেশা খাতের আয় থাকলে উক্ত ব্যবসা বা পেশার সমাপনী মূলধনের পরিমাণ উপ-ক্রমিক ৫এ তে উল্লেখ করতে হবে। করদাতা কোম্পানীর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হলে উপ-ক্রমিক ৫বি তে শেয়ার মালিকানার বিবরণ লিপিবদ্ধ করতে হবে। এরূপ করদাতার জন্য তফসিল ২৫ সংযুক্ত করতে হবে।  উপ-ক্রমিক ৫এ ও ৫বি এর সমষ্টি ক্রমিক ৫ এ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৬     করদাতার অকৃষি সম্পত্তি (আবাসিক বা বাণিজ্যিক প্লট, বাড়ি, এপার্টমেন্ট ইত্যাদি অকৃষি সম্পত্তির
কয়েকটি উদাহরণ) থাকলে তফসিল ২৫ সংযুক্ত করে অকৃষি সম্পত্তির বিবরণ, মূল্য ইত্যাদির বিস্তারিত তথ্য সেখানে দিতে হবে। এ ক্রমিকের উপ-ক্রমিক ৬এ তে করদাতার অকৃষি সম্পত্তির মূল্য এবং ৬বিতে অকৃষি সম্পত্তির বিপরীতে কোন অগ্রিম অর্থ পরিশোধ করা হলে কার জের (balance) লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৭:    করদাতার কৃষি সম্পত্তি থাকলে এখানে লিখতে হবে এবং তফসিল ২৫ সংযুক্ত করে অকৃষি সম্পত্তির বিবরণ, মূল্য ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য সেখানে দিতে হবে।
ক্রমিক নং-৮:     করদাতার আর্থিক সম্পত্তি (financial assets) যেমন শেয়ার, ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, বন্ড ও অন্যান্য
নিরাপত্ত জামানত, এফডিআর, মেয়াদি আমানত, সঞ্চয়ী পেনশন স্কীম, ঋণ প্রদানসহ অন্য কোন financial assets থাকলে তার তথ্য এ ক্রমিকে প্রদান করতে হবে।
ক্রমিক নং-৯:     করদাতার ব্যক্তিগত মোটরগাড়ি, জীপ বা মাইক্রোবাস থাকলে তার মূল্য (রেজিস্ট্রেশন ও আনুষঙ্গিক
খরচসহ) ক্রমিক ৯ এ লিখতে হবে। একাধিক যানবাহন থাকলে (রেজিস্ট্রেশন ও অনুষঙ্গিক খরচসহ) মূল্যের সামষ্টি লিখতে হবে। প্রতিটি যানবাহনের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড নাম, ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি (সিসি)  ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে হবে। দুইয়ের অধিক যানবাহন থাকলে আলাদা কাগজ সংযুক্ত করে বর্ণিত তথ্য সমূহ লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ক্রমিক নং-১০:    করদাতার সোনা, হীরক, জেম বা মূল্যবান পাথরসহ কোন অরলকারাদি থাকলে তার তথ্য এ ক্রমিকে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১১:    এ ক্রমিকে করদাতার আসবাবপত্র, সরঞ্জাম, ইলেট্রনিক্স দ্রব্যাদি ইত্যাদির তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে।
ক্রমিক নং-১২:    এছাড়া ১-১১ ক্রমিকে উল্লিখিত সম্পত্তির বাইরে করদাতার আরো কোন মূল্যবান সম্পত্তি থাকলে তার তথ্য এ ক্রমিকে প্রদান করতে হবে।
ক্রমিক নং-১৩:    করদাতার ব্যবসা-বহির্ভূত নগদ অর্থ, ব্যাংক, কার্ড বা ইলেট্রনিক অর্থের ব্যালেন্স, প্রভিডেন্ট ফন্ডের ব্যালেন্স এবং

ক্রমিক ৮-এ উল্লিখিত অংক বাদে অন্যান্য জমা, ব্যালেন্স বা অগ্রিম প্রতদানের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৪:    ক্রমিক ১-১৩ উল্লিখিত সম্পত্তির পরিমাণের সমষ্টি এ ক্রমিকে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৫:    করদাতার ব্যবসা-বহির্ভূত দায় যেমন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ, জামানবিহীন ঋণ, ওভারড্রাফট ও অন্যান্য ঋণ (যেমন, বাকীতে ক্রয় সংক্রান্ত দায়) এ ক্রমিকে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৬:     ক্রমিক ১৪ ও ক্রমিক ১৫ এর বিয়োগফল সংশ্লিষ্ট আয় বছরের নীট পরিসম্পদ, যা ক্রমিক ১৬ তে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৭:     পূর্ববর্তী আয় বছরের শেষ তারিখের নীট পরিসম্পদ ক্রমিক ১৭ তে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৮:    ক্রমিক ১৬ ও ক্রমিক ১৭ এর বিয়োগফল হবে নীট পরিসম্পদের পরিবর্তন (পরিবৃদ্ধি বা হ্রাস), যা ক্রমিক ১৮ তে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৯:     সম্পদ অর্জন ব্যতীত অন্য কোন কারণে তহবিলের বহিঃপ্রবাহ (outflow) ঘটলে তা এ ক্রমিকে লিখতে
হবে। এ ক্রমিকে যে বিষয়গুলো থাকবে তা হলো: বার্সিক জীবনযাত্রার সংশ্লিষ্ট ব্যয়, কর পরিশোধ, ব্যবসা বহির্ভূত কোন আর্থিক লোকসান, কর্তন বা IT-10B2016  তে উল্লিখিত নয় এমন কোন ব্যয়, কোন দান বা কোন চাঁদা প্রদান (যা পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী আর কোথাও প্রতিফলিত হয়নি)।
ক্রমিক নং-২০:     ক্রমিক ১৮ ও ক্রমিক ১৯ এর যোগফল হবে আয় বছরের করদাতার তহবিলের মোট বহিঃপ্রবাহ (outflow), যা এ ক্রমিকে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-২১:    এ ক্রমিকে তহবিলের উৎস লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-২২:     ক্রমিক ২১ ও ক্রমিক ২০ এর বিয়োগফল এ ক্রমিকে লিখতে হবে।

(খ). জীবনযাত্রার মান সম্পর্কিত তথ্য বিবরণী বা ফরম আইটি-১০বিবি এবং আইটি ১০বিবি ২০১৬ পূরণের নিয়ম

●     যে সকল করদাতা প্রচলিত রিটার্ন ফরম অর্থাৎ আইটি-১১গ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণীটি প্রযোজ্য হবে।
●     যে সকল  বেতনভোগী  করদাতা  এবং  স্বল্প  আয়বিশিষ্ট  পেশাজীবি  ও  ব্যবসায়ী করদাতা সহজীকৃত রিটার্ন ফরম অর্থাৎ আইটি-১১ঙ ও  আইটি-১১চ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে এ বিবরণীটি প্রযোজ্য হবে না।
●     যে সকল করদাতা নতুন প্রবর্তিত ফরম অর্থাৎ- আইটি ১১গ ২০১৬ এর মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের ক্ষেত্রে আইটি-১০ বিবি ২০১৬ বিবরণটি প্রযোজ্য হবে।

আইটি১০বিবি বিবরণীতে করদাতার  নাম, টিআইএন এবং আয় বছরে জীবনযাত্রার বিভিন্ন বিষয়ের খরচের উল্লেখ করতে হবে। রিটার্নের এ সংক্রান্ত  ছকটি পূরণের নিয়ম নীচে বর্ণনা করা হলো-

ক্রমিক নং-১ঃ      এই ঘরে করদাতা ও তার পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের ভরণ পোষণ বাবদ খরচের অংকটি লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-২ঃ      এই ঘরে উৎসে কেটে নেয়া কর এবং নিজে জমা দেয়া বা পরিশোধ করা করের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৩ঃ      এই ঘরে বাড়ী ভাড়া বাবদ খরচের অংক লিখতে হবে। ভাড়া বাড়ী না হলে মন্তব্যের ঘরে  নিজের বাড়ী, পিতার বাড়ী, নিয়োগ কর্তা প্রদত্ত বাড়ী অথবা অন্য কারো হলে সে তথ্য লিখতে হবে।  নিজ বাড়ীর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়  (যেমন পৌরকর, সার্ভিস চার্জ ইত্যাদি) যদি থাকে তবে তা এখানে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৪ঃ      এই ঘরে যানবাহন বিষয়ে যাবতীয় ব্যয় যেমন-জ্বালানী, রক্ষণাবেক্ষণ, ড্রাইভারের বেতন  ইত্যাদি খাতে  ব্যয়ের মোট পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৫ঃ      এই ঘরে বিদ্যুৎ বিল বাবদ পরিশোধিত অংকের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৬ঃ      এই ঘরে আবাসিক পানির বিল বাবদ পরিশোধিত অংকের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৭ঃ      এই ঘরে আবাসিক গ্যাস বিল বাবদ পরিশোধিত অংকের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৮ঃ      এই ঘরে আবাসিক টেলিফোন বিল বাবদ পরিশোধিত অংকের পরিমাণ লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৯ঃ      এই ঘরে সন্তানদের লেখাপড়া বাবদ যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তা লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১০ঃ      করদাতা  নিজ  ব্যয়ে  বিদেশ ভ্রমণ  করে  থাকলে  বিদেশ ভ্রমণ বাবদ যাবতীয় খরচ এই ঘরে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১১ঃ      বিভিন্ন  উৎসব যেমন -বিয়ে, জন্মদিন  ইত্যাদি বাবদ কোন খরচ হয়ে  থাকলে সে খরচ, চিকিৎসা খরচ  এবং  কাউকে অর্থ দান করা হয়ে থাকলে সে দানের অংক এ ঘরে লিখতে হবে।

জীবনযাত্রার  মান  স¤পর্কিত তথ্য বিবরণী বা ফরম আইটি-১০বিবিতে উল্লিখিত খরচসমূহের যোগফল রিটার্ন ফরমের ১৫(ক) নং ক্রমিকে উল্লেখ করতে হবে।

●      বেতনভোগী করদাতাদের মধ্যে যারা আইটি-১১ঙ এবং ব্যবসা বা পেশার আয়ের ক্ষেত্রে যারা আইটি-১১চ এর মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন তাদের জন্য জীবনযাত্রার মান সম্পর্কিত তথ্য বিবরণী বা ফরম আইটি- ১০বিবি দাখিল বাধ্যতামূলক নয়।


নতুন প্রবর্তিত জীবনযাত্রা সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী (আইটি-১০বিবি ২০১৬) এর বিভিন্ন অংশের বিবরণ:
ক্রমিক নং-১:     কর বছরের তথ্য দিতে হবে। ২০১৬-১৭ কর বছরের জন্য জীবনযাত্রা সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে এ ঘরে বাংলা বা ইংরেজীতে নি¤œরূপভাবে লিখতে হবে:

201617

ক্রমিক নং-২:     আয় বছরের শেষ দিনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে। তারিখটি দিন মাস বছরে আকারে লিখতে হবে। ২০১৬-১৭ কর বছরের জন্য জীবনযাত্রা সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে এ ঘরে বাংলা বা ইংরেজীতে নিম্নরূপভাবে লিখতে হবে:

30062016

ক্রমিক নং-৩:     করদাতার নাম লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৪:     করদাতার টিআইএন লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৫:     এ ক্রমিকে করদাতা ও তার পরিবারের নির্ভরশীল সদস্যদের ভরণ পোষণ ব্যয়ের দিতে হবে।
ক্রমিক নং-৬:     এ ক্রমিকে আবাসন সংক্রান্ত ব্যয়ের তথ্য লিখতে হবে। ভাড়া বাড়িতে বসবাস না করা হলে মন্তব্যের ঘরে নিজের বাড়ি, পিতা মাতার বাড়ি, নিয়োগকর্তা প্রদত্ত বাড়ি অথবা অন্য কারো হলে সে তথ্য লিখতে হবে। নিজ বাড়ির     রক্ষনাবেক্ষন ব্যয়  (যেমন পৌরকর, সার্ভিস চার্জ ইত্যাদি) যদি ধাকে তবে তা এখানে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৭:     এ ক্রমিকে যানবাহন বিষয়ে যাবতীয় ব্যয় যেমন-জ্বালানী, রক্ষনাবেক্ষণ, ড্রাইবারের বেতন ইত্যাতি খাতে ব্যয়ের তথ্য দিতে হবে।
ক্রমিক নং-৮:     বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিল, পয়ঃনিষ্কাষন ও দৈনন্দিন বর্জ্য অপসারণ খরচ, আবাসিক টেলিফোন বিল, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন চ্যানেল সাবস্ক্রিপশন বিল, গৃহস্থালির সহায়ক কর্মী ও গৃহস্থাল ও সেবা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয়ের তথ্য এ ক্রমিকে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-৯:     এ ক্রমিকে সন্তানদের পড়াশোনার ব্যযের তথ্য দিতে হবে।
ক্রমিক নং-১০:    উৎসব, অনুষ্ঠান, উপহার, দেশে ও বিদেশে ভ্রমন, অবকাশ, অনুদান, মানবিক সহায়তাসহ অন্যান্য বিশেষ ব্যয়ের তথ্য এ ক্রমিকে দিতে হবে।
ক্রমিক নং-১১:     উপরের ক্রমিক ৫ হতে ১০ এ বর্ণিত ব্যয়ের বাইরে অন্য কোন ব্যয় হয়ে থাকলে সে খরচ, চিকিৎসা খরচ থাকলে সে অংক এ ঘরে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১২:     জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট মোট খরচ অর্থাৎ ক্রমিক ০৫ হতে ক্রমিক ১১ তে প্রদর্শিত ব্যয়ের সমষ্টি এ ঘরে লিখতে হবে।
ক্রমিক নং-১৩:     এ ঘরে করদাতা কর্তৃক উৎসে পরিশোধিত কর এবং করদাতার নিজের পরিশোধ করা আয়কর, সারচার্জ অথবা অন্য কোন পরিশোধিত অংক লিখতে হবে। বিবেচ্য আয় বছরে অন্য কোন কর বছরের কর, সারচার্জ, অথবা কর সংশ্লিষ্ট অন্য কোন অংক পরিশোধ করা হলে তাও এ ক্রমিকে উল্লেখ করতে হবে।
ক্রমিক নং-১৪:     ক্রমিক নং ১২ ও ১৩ এর প্রদর্শিত অংকের সমষ্টি এ ক্রমিকে উল্লেখ করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *